প্যারিস অলিম্পিক ২০২৪-এ অংশগ্রহণ করতে গিয়ে চুরির শিকার হলো আর্জেন্টিনা দল। গত ম্যাচে মরক্কোর বিপক্ষে নাটকীয় হারের পরে আর্জেন্টাইন কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানো এই ঘটনা সম্পর্কে মিডিয়াকে জানায়। অলিম্পিকে আর্জেন্টিনা দলে চুরি, প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে তাদের।
চলমান প্যারিস অলিম্পিকে আর্জেন্টিনার শুরুটা ভালো হয়নি। নাটকীয় ম্যাচে মরক্কোর বিপক্ষে ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরে এই টুর্নামেন্ট শুরু করতে হয় আলবিসেলেস্তাদের। যেখানে আর্জেন্টিনার একটি গোল বাতিল নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। বিশ্বের সেরা ফুটবলার স্বয়ং লিওনের মেসি এই প্রসঙ্গে তার ইন্সটাগ্রামে স্টোরির মাধ্যমে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।
তবে ম্যাচের আগে অনুশীলনের সময় একটি বাজে পরিস্থিতির শিকার হয় আর্জেন্টিনা দল। এই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার থিয়াগো আলমাদার বেশ কিছু মূল্যবান জিনিস চুরি গিয়েছে। ভুক্তভোগীর তথ্য অনুযায়ী তার একটি আংটি এবং মূল্যবান ঘড়ি ও অন্যান্য জিনিস খুঁজে পাচ্ছে না।
ফরাসি টেলিভিশন বিএফএম টিভির তথ্য অনুযায়ী, ভুক্তভোগী ৫০ হাজার ইউরো তথা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় প্রায় ৬৪ লাখ টাকা চুরির কথা বলেছেন। এই চুরির ঘটনা আর্জেন্টিনা দলের অনুশীলন স্থানে ঘটেছে। ইতিমধ্যে পুলিশে অভিযোগ করেছে আর্জেন্টিনা দল।
সেঁত এতিয়েনের একটি হোটেলে উঠেছে আর্জেন্টিনা অলিম্পিক ফুটবল দল। তবে ফুটবলারদের রুমের দরজা বা জানালা ভেঙে চোর প্রবেশ করার কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এই তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন আর্জেন্টাইন সংবাদ মাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস।
মরক্কোর বিপরীতে নাটকীয় ম্যাচে হারার পরে চুরির বিষয় নিয়ে আর্জেন্টাইন কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানো সংবাদমাধ্যমকে জানান “ওরা (আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়রা) যখন অনুশীলনে গিয়েছে, তখন এদিকে অলিম্পিক গেমসে চুরির ঘটনা ঘটে।
আমরা অনুশীলনের পরে এই সম্পর্কে কিছু জানাইনি, জানিয়ে কোন কাজ হবে বলে মনে হয় না। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতির পরপরই অলিম্পিকে প্রথম ম্যাচের জন্য মাঠে নামে ছেলেরা।
২০০৪ ও ২০০৮ সালের স্বর্ণজয়ী দল আর্জেন্টিনা এবারের প্যারিস অলিম্পিক আসরের শুরুটা ভালো করতে পারেনি। ঐদিন রাতে এক নাটকীয় ম্যাচের পরে পরাজয় দেখতে হয় হুলিয়ান আলভারেজ ও নিকোলাস ওতামেন্দির দলকে।
ম্যাচে ২-১ গোলে মরক্কো এগিয়ে থাকলেও অতিরিক্ত সময়ের ১৬ মিনিটে আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান মেদিনা মরক্কোর জালে বল জড়ান। গোলের পরপরই মরক্কোর কিছু সমর্থক হঠাৎ মাঠে ঢুকে যায় এবং গ্যালারি থেকে বোতল-বৃষ্টি শুরু হয়। ওই সময় ইমারজেন্সি ভাবে রেফারি ম্যাচ স্থগিত করে দুই দলকে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠায়।
পরবর্তীতে প্রায় ২ ঘন্টা পরে খেলা শুরু হলে VAR চেকের মাধ্যমে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলটি বাতিল করা হয়। কারণ আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার ব্রুনো অ্যামিওনে অফসাইডে ছিলেন। পরবর্তীতে মাত্র ৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ড ম্যাচ খেলা হয়। উক্ত সময়ে আর্জেন্টিনা ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। যার কারণে ২-১ গোলের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।
মরক্কো ম্যাচের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে ফিফার কাছে অভিযোগ দায়ের করার কথা জানান আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া। এই বিষয়ে ক্লদিও তাপিয়া নিজের এক্স (টুইটার) হ্যান্ডেলে তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আর্জেন্টিনার পরবর্তী ম্যাচ ইরাকের বিপক্ষে লিঁওতে আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে। এবং তৃতীয় ম্যাচ আগামী মঙ্গলবার ইউক্রেনের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। কোয়াটার ফাইনালে নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে গ্রুপ পর্বের পরবর্তী ২টি ম্যাচ জয়লাভ করা প্রয়োজন।