মূল একাদশের বাইরের বেশ কিছু খেলোয়াড় নিয়ে কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্বের সর্বশেষ ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় তুলে নেয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। এছাড়াও এই ম্যাচে বেশ কিছু রেকর্ড এর জন্ম দিয়েছে বর্তমানে ফিফা র্যাংকিংয়ে নাম্বার ওয়ান এই দলটি।
ইনজুরির কারণে দলের মূল খেলোয়াড় ও কাপ্তান লিওনেল মেসি এবং মার্কোস আকুনা দলের বাইরে। এছাড়াও আর্জেন্টিনা পেরুর বিপক্ষের ম্যাচ এর আগে গ্রুপ পর্বের ২টি ম্যাচ জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ইতিমধ্যে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে।
যার কারণে আর্জেন্টিনা টিম ম্যানেজমেন্ট বেশ কিছু খেলোয়াড়কে এই ম্যাচ থেকে বিশ্রাম দিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে দলের পরিচিত মুখ রদ্রিগো ডি পল, এলেক্সা ম্যাক এলিস্টার, নাহুয়েল মলিনা, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, লিসান্দ্র মার্টিনেজ, হূলিয়ান আলভারেজ সহ আরো অনেকে।
এবং নিষেধাজ্ঞার মুখে ছিলেন আর্জেন্টিনার মাস্টারমাইন্ড কোচ লিওনের এস্ক্যালোনি। কাতারের বিপক্ষে ২য় আর্ধে দেরি করে মাঠে নামায় কোপা আমেরিকা কর্তৃপক্ষ তাকে ১৫,০০০ হাজার ডলার ও ১ ম্যাচের জন্য নিষেধাজ্ঞ শাস্তি দিয়েছেন। যার ফলে তিনিও দলের সাথে ছিলেন না।
তবে ডাগআউটে পাবলো আইমার আর ওয়াল্টার স্যামুয়েল ছিলেন দল ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে। তবে আর্জেন্টিনার এই ভাঙ্গাচুরা দল নিয়েও তাদেরকে থামানো যায়নি। গোল মেশিন খ্যাত লাউতারও মার্টিনেজ এর জোড়া গোলে জয় পায় আর্জেন্টিনা।
টানা ৩ ম্যাচে গোল করে এক অবিশ্বাস্য রেকর্ড এর জন্ম দেয় এই গোল মেশিন। ২০০১ সালের পর থেকে কোপা আমেরিকায় গ্রুপ পর্বের টানা ৩ ম্যাচে গোল করার রেকর্ড ছিল না কোন প্লেয়ারের। ২৩ বছর পর সেই কীর্তি আবারো গড়লেন আর্জেন্টাইন এই স্ট্রাইকার।
এবং কোপা আমেরিকার এই সিজনে ৪টি গোল করে এখন পর্যন্ত সেরা গোল স্কোরার লাউতারও মার্টিনেজ। পাশাপাশি এই ম্যাচে আরও একটি বিরল রেকর্ড করেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা। ৭২ মিনিটে পেনাল্টিতে গোল করার সুযোগ থাকলেও তা মিস করেন লিয়ান্দ্রো পারেদেস।
বিগত ২৫ বছরে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের জার্সিতে কোপা আমেরিকার আসরে প্রথম পেনাল্টি (পেনাল্টি শুট আউট ব্যতীত) মিস করেন তিনি। এর আগে ১৯৯৯ সালে ব্রাজিলের বিপক্ষে এমন মিস করেছিলেন রবার্তো আয়ালা।
তবে পেনাল্টি মিস করার আগেই ১-০ গোলে লিড পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। এবং পুরো ম্যাচে পূর্ণ আধিপত্য রেখেছে বর্তমান কোপা চ্যাম্পিয়নসরা। প্রথম ৪৫ মিনিটে গোলের দেখা পায়নি আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার বেশ কিছু লো অ্যাটাক পেরুর ডিফেন্স এর কাছে আটকে গিয়েছে। আর গোলবারের নিচে পেরুর ত্রাতা হয়ে ছিলেন পেদ্রো গ্যালেসি।
ভয়ানক তিনটি গোলের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন দলকে। বিরতির পর ভাঙ্গে ব্যাঘাত। ডি মারিয়ার বাড়িয়ে দেওয়া বলে এবং লাউতারও মার্টিনেজের অসাধারণ গোলে ভাঙ্গে পেরুর ডিফেন্স লাইনআপ। আর্জেন্টিনা প্রথম গোলের দেখা পায় ৪৭ মিনিটে।
এরপরে উভয় দলকে মোটামুটি আক্রমণাত্মক ভাবে দেখা গিয়েছে। এই ম্যাচে বেশ কিছু ফাউল করেছে উভয় দল। পেরু এবং আর্জেন্টিনার ম্যাচে মোট ফাউলের সংখ্যা ছিল ৩১টি। তবে মাঝে নিকোলাস টালিয়াফিকোর মাধ্যমে আর্জেন্টিনা আরও একটি গোল পেয়েছিল কিন্তু ফাউলের কারণে সেই গোল বাতিল করা হয়।
পরবর্তীতে ৭২ মিনিটে গোলমুখে আর্জেন্টিনার শট হেসুস কাস্তিলোর হাতে লাগায় পেনাল্টি দেওয়া হয় আর্জেন্টিনাকে। কিন্তু পেনাল্টিতে লিয়ান্দ্রো পারেদেস এর জোরালো শর্ট ফিরে আসে গোলবার থেকে। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে আবারো চিপ শটে গোল পেয়ে যান লাউতারও মার্টিনেজ।
কোপা আমেরিকার এই আসরে গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচেই জয়লাভ করে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালের পরবর্তী ম্যাচে (৫ই জুলাই) মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। এবং এই গ্রুপ থেকে ৪ পয়েন্ট নিয়ে কানাডা দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে।