আজ সকালের ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৯ উইকেটে পরাজিত করে সর্বপ্রথম ফাইনালিস্ট হিসেবে নাম লেখালো মাকরামের দক্ষিণ আফ্রিকা। এইডেন মাকরাম ও রেজা হেনড্রিক্স অপরাজিত থেকে ফাইনালে তোলেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
সুপার ৮ থেকে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে জয় তুলে নেয় রশিদ খানের আফগানিস্তান। কিন্তু সেমিফাইনালে এসে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে মাত্র ৫৬ রান (১১.৫ বল) অলআউট হয়ে যায় আফগানিস্তান। আফগানদের ৯ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেট হাতে রেখে ৮.৫ ওভারে, ৬০ রান করে জয় তুলে নেয়। টস জিতে কঠিন উইকেটে প্রথমে ব্যাটিংয়ে আসে আফগানিস্তান। কিন্তু দুর্ঘটনা বসত আফগানিস্তানের কোন ব্যাটসম্যান ১০ এর বেশি রান করতে পারেনি। যার ফলশ্রুতিতে ৫৬ রানে অলআউট হয় তারা।
প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ ছিল আফগানিস্তানের হাতে। এবং টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম আফগানিস্তান সেমিফাইনালে এসেছে। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা আফগানিস্তানের থেকে তুলনামূলক শক্ত দল হলেও তারা বেশ কয়েকবার সেমিফাইনালে বিদায় নিয়েছে।
কিন্তু সকল পরিসংখ্যান ভেঙে এবারের টি-টোয়েন্টি আসরে আফগানিস্তানকে দুমড়ে মুছরে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের ফাইনাল নিশ্চিত করলো। ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ের পর এই প্রথম আইসিসির ইভেন্টে ফাইনালে উঠলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
এই ম্যাচে আফগানিস্তান ব্যাটিংয়ে নেমে ০.৬ ওভারে ৩ বল খেলে ০ রানে আউট হন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। এবং ২.৩ ওপারে মার্কো জাংশনের বলে ড্রেসিংরুমে ফেরেন গুলবাদিন নাইভ। ৩.১ ওভারে রাবাদার শিকার ৫ বলে ২ রান করে আউট হন আফগানিস্তানের আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান।
পরবর্তীতে একই ওভার ৪র্থ বলে মোহাম্মদ নাবি সাজঘরে ফেরেন। আফগানিস্তানের পঞ্চম উইকেট পরে ৪ ওভার ৬ বলে। এবারে আউট হন Nangeyalia Kharote, উইকেট তুলে নেয় মার্কো জাংশন। পরবর্তীতে ৬.৩ ওভার আফগানিস্তান ইনিংসের সব থেকে বেশি রান করা আজমত উল্লাহ ওমরজাই (১০) ফিরে যান।
জেনে নিন ক্রিকেটে কত ধরনের আউট রয়েছে!
পরবর্তীতে একে একে করে ১১.৫ বলে আফগানিস্তানের সকল ব্যাটসম্যান অলআউট হয়ে যায়। এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩টি করে উইকেট শিকার করেন Tabraiz Shamsi ও মার্কো জাংশন। এবং ২টি করে উইকেট শিকার করেন Anrich Nortje ও কাগিসো রাবাদা।
পরবর্তীতে আফগানিস্তান বোলিংয়ে এসে ১.৫ ওভারে ফজলে ফারুকী শিকার করে নাই কুইনটন ডিককের উইকেট। এরপরে মাত্র ৮.৫ বলে রেজা হেনড্রিক্স ও ক্যাপ্টেন এইডেন মার্করাম এর ব্যাটিংয়ে ৬০ রান তুলে ৯ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করে। রেজা হেনড্রিক্স এবং এইডেন মার্করাম এর ৪৩ বলে ৫৫ রানের জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্নের ফাইনাল সহজ হয়ে গিয়েছে।
২৯ বলে ২৩ রান করে এক প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন প্রোটিয়া ক্যাপ্টেন এইডেন মার্করাম। অপরদিকে ২৫ বলে ২৯ রানের মারমুখো ব্যাটিংয়ে অপরাজিতা ছিলেন ওপেনার রেজা হেনড্রিক্স। এই ম্যাচে আফগানিস্তানকে সর্বনিম্ন রানে অলআউট করে, ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেয়া প্রোটিয়া পেসার মার্কো জাংশন “ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ” হয়। তিনি জানান সবাই খুব ভালো খেলেছে এবং তাদের পরিকল্পনা কাজে দিয়েছে।
সামনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিকট ইতিহাস গড়ার সুযোগ রয়েছে। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দক্ষিণ আফ্রিকা। তারা এখন পর্যন্ত কোন ম্যাচ পরাজিত হয়নি। ফাইনাল (আর এক ম্যাচ) জিতলে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে টানা অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করবে প্রথম ফাইনালিস্ট এই দল।
ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভাল স্টেডিয়ামে শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিপক্ষ এখনো নির্ধারিত হয়নি। আজ রাত ৮.৩০ মিনিটে (বাংলাদেশী টাইম অনুযায়ী) দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট হিসেবে নাম লেখানোর জন্য গায়ানার স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে শক্তিশালী ইংল্যান্ড এবং ভারত। উক্ত ম্যাচে জয়ী দল ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি লড়াই করবে।
আপনার কি মনে হয়, দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কোন দল বিজয়ী হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে মাঠে নামবে?